Amar Ganit Class 5 – গোলাকার পথে কিছু খুঁজি | বৃত্ত – হুবহু পাঠ ২০ – পাতা (২২৬-২৩১)
গোলাকার পথে কিছু খুঁজি | বৃত্ত
বন্ধুরা,
আমরা এই অধ্যায়ে বৃত্ত খুঁজব। এই জন্য আমরা আমাদের আশেপাশে কিছু জিনিস থেকে গোলাকার
পথে কিছু খুঁজব অর্থাৎ বৃত্ত খুঁজব। নিচে আমাদের চেনা কয়েকটা চেনা বস্তুর সাহায্যে
গোলাকার বা বৃত্ত আকৃতির কিছু খুঁজব বা আঁকবো। নিচে লক্ষ্য করি-
🥤→○
🕑→○
🌑→○
এইভাবে আমরা
বিভিন্ন বস্তু থেকে ছোটো বা বড়ো বৃত্ত পেলাম, তাঁদের প্রত্যেকটির বক্ররেখা ১টি। আর
কীসের থেকে বৃত্ত পাব তা খুঁজে দেখি ও আঁকি।
১. ফুটবল/ ⚽→○
২. সূর্য/☼→○
৩. থালা/🍽→○
৪. মুখমন্ডল/☺→○
৫. সিডি/💿→○ ইত্যাদি।
বিভিন্ন দৈর্ঘ্যের
রেখাংশ আকার জন্য আমরা স্কেল এর সাহায্য নিই। বিভিন্ন কোণের মাপ
নেয়ার জন্য আমরা চাঁদা এর সাহায্য নিই।
পেনসিল কম্পাসের
সাহায্য নিয়ে আমরা বিভিন্ন আকারের (ছোটো বা বড়ো) বৃত্ত আকার চেষ্টা করি [পাতা-২২৭]।
কীভাবে পেনসিল
কম্পাসের সাহায্যে বৃত্ত আঁকতে পারি দেখিঃ
১. পেনসিল
কম্পাসের একপ্রান্তে কাঁটা থাকে। অপর প্রান্তে ছুঁচালো মুখওলা পেনসিল ঢুকিয়ে স্ক্রু
দিয়ে মজবুত করে আটকাই।
২. খাতায়
একটা বিন্দু স্থির করি।
৩. পেনসিল
কম্পাসের দুটো বাহুকে বৃত্তের মাপ অনুযায়ী বাড়িয়ে বা কমিয়ে একটা নির্দিষ্ট দূরত্বে
রাখি।
৪. পেনসিল
কম্পাসের কাঁটাটিকে খাতার নির্দিষ্ট বিন্দুর উপর দৃঢ়ভাবে বসিয়ে এমনভাবে ঘোরাই যাতে
অপর প্রান্তের পেনসিল এক বিন্দু থেকে সরে আবার সেই বিন্দুতে ফিরে আসলে খাতায় একটি বৃত্ত
পাই।
বাস্তব উদাহরণঃ
যদি চকের
গুঁড়ো দিয়ে মাঠে খুব বড়ো একটা বৃত্ত আঁকতে হয় তবে মাঠের মাঝে একটা খুঁটি পুঁতে সেখানে
নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্যের একটা দড়ি বেঁধে অপর প্রান্ত শক্ত করে ধরে চকের গুঁড়ো দিয়ে নির্দিষ্ট
বিন্দু থেকে ঘুরিয়ে আবার সেই বিন্দুতে ফিরে এলে একটা বৃত্ত পাব।
একই বিন্দুতে
কম্পাসকে বসিয়ে কতগুলো বৃত্ত পাই দেখি [পাতা-২২৮]
খাতায় একটা
কম্পাসকে একটা নির্দিষ্ট বিন্দুতে বসিয়ে যখন অনেকগুলো বৃত্ত আঁকি, দেখলাম বৃত্তগুলি
সমান হয় না। ছোটো থেকে বড়ো বিভিন্ন আকারের বৃত্তের ক্ষেত্রে ভেতরের একটা বিন্দু নির্দিষ্ট,
কিন্তু পেনসিল ও কাঁটার দূরত্ব কমিয়ে বাড়িয়ে অনেক বৃত্ত/বৃত্তসমূহ পাই।
নির্দিষ্ট
বিন্দু O-কে কেন্দ্র করে বৃত্তগুলো আঁকলাম। তাই O হল বৃত্তের কেন্দ্র। বৃত্তের আকার
পেনসিল ও কম্পাসের দূরত্বের উপর নির্ভর করে। এই দূরত্ব হল ব্যাসার্ধ। এই বৃত্তগুলোর
কেন্দ্র এক। তাই এরা সমকেন্দ্রিক বৃত্ত। OA, OB, OC ও OD হল বৃত্তটির চারটি ব্যাসার্ধ।
ব্যাসার্ধ ছোটো হলে (অর্থাৎ পেনসিল কম্পাসের কাঁটা ও পেনসিলের ডগার দূরত্ব কম হলে)
বৃত্তও (OA<OB<OC<OD) ছোটো হয়।
বৃত্তাকার
মাঠে যখন দৌড় প্রতিযোগিতার জন্য বিভিন্ন লাইন করা হয়, তখন বাইরের প্রতিযোগী আগে দাঁড়ায়
আর ভিতরের প্রতিযোগী পিছনে দাঁড়ায় কেন?
দেখে মনে
হয় প্রতিযোগিতায় ভেতরের বৃত্তটি ছোটো কিন্তু বেশি দৌড়াতে হয়। আবার বাইরের বৃত্তটি বড়ো
কিন্তু কম দৌড়াতে হয়।
ছোটো বৃত্তাকার
মাঠের একটা নির্দিষ্ট বিন্দু থেকে শুরু করে ধার বরাবর ঘুরে আবার সেই বিন্দুতে ফিরে
আসতে যে পথ অতিক্রম করি, বড়ো বৃত্তের ক্ষেত্রে সেই পথের দূরত্ব বেশি হয়। সেইজন্য দৌড়
প্রতিযোগিতায় প্রতিযোগীদের ক্ষেত্রে ভেতরের ছোটো বৃত্তের ট্রাকের লাইন যেখানে শেষ হয়েছে,
বাইরের বড়ো বৃত্তের ট্রাকের লাইন আগে শেষ করতে হয়।
শিখনঃ
কোনো বৃত্তাকার
মাঠের বৃত্তের উপরে একটি বিন্দু থেকে মাঠের ধার বরাবর হাঁটতে শুরু করে আবার সেই বিন্দুতে
ফিরে আসতে যে দৈর্ঘ্যের পথ অতিক্রম করতে হয় তা হল বৃত্তের পরিধি।
বলো দেখি
[পাতা-২২৯]
১. দুটো বৃত্তাকার
মাঠের ব্যাসার্ধ যথাক্রমে ১৫ মিটার ও ১০ মিটার। দুটো মাঠের ধার বরাবর বেড়া দিতে হবে।
কোন বেড়ার দৈর্ঘ্য বেশি হবে?
২. তামার
তার দিয়ে দুটি বৃত্তাকার রিং তৈরি করব। একটার ব্যাসার্ধ ২ সেমি ও অপরটির ব্যাসার্ধ
৪ সেমি। কোন রিং এর জন্য বেশি তামার তার লাগবে?
সমাধানঃ
আমরা জানি,
যে বৃত্তের ব্যাসার্ধ ছোট হয় সেই বৃত্তটাও ছোট হয় অর্থাৎ তার পরিধি ছোট হয়। আর যে বৃত্তের
ব্যাসার্ধ বড়ো হয় সেই বৃত্তটাও বড়ো হয় অর্থাৎ তার পরিধি বড়ো হয়।
১. ১৫
> ১০
অর্থাৎ, ১৫
মিটার ব্যাসার্ধের বৃত্তাকার মাঠের পরিধি বা ধারের দৈর্ঘ্য বেশি হবে।
ফলাফলঃ ১৫
মিটার ব্যাসার্ধের বৃত্তাকার মাঠের জন্য বেড়ার দৈর্ঘ্য বেশি হবে।
২. ৪
> ২
অর্থাৎ, ৪
সেমি ব্যাসার্ধ বিশিষ্ট তামার রিং এর পরিধি বেশি হবে।
ফলাফলঃ ৪
সেমি ব্যাসার্ধ বিশিষ্ট তামার রিং তৈরিতে তামার তার বেশি লাগবে।
বিভিন্ন ব্যাসার্ধের বৃত্ত আঁকি ও তাঁদের বিভিন্ন অংশ খুঁজি [পাতা-২৩০]
৪ সেমি ব্যাসার্ধের
একটি বৃত্ত আঁকি।
অঙ্কনঃ
প্রথমে স্কেলের
সাহায্যে ৪ সেমি দৈর্ঘ্যের রেখাংশ নিলাম। তার নাম দিলাম AB। কম্পাসের কাঁটা A বিন্দুতে
বসিয়ে B বিন্দুতে পেনসিল রেখে দূরত্ব ঠিক করে নিলাম।
A বিন্দুতে
বসিয়ে AB দূরত্বের ব্যাসার্ধ নিয়ে কম্পাস ঘুরিয়ে নির্দিষ্ট বৃত্তটি পেলাম।
বৃত্ত আকার
চেষ্টা করি যার ব্যাসার্ধঃ
(১) ২ সেমি
অঙ্কনঃ
প্রথমে স্কেলের
সাহায্যে ২ সেমি দৈর্ঘ্যের রেখাংশ নিলাম। তার নাম দিলাম AB। কম্পাসের কাঁটা A বিন্দুতে
বসিয়ে B বিন্দুতে পেনসিল রেখে দূরত্ব ঠিক করে নিলাম।
A বিন্দুতে
বসিয়ে AB দূরত্বের ব্যাসার্ধ নিয়ে কম্পাস ঘুরিয়ে নির্দিষ্ট বৃত্তটি পেলাম।
(২) ৩ সেমি
অঙ্কনঃ ১
নং এর ন্যায় অঙ্কন করো।
(৩) ৩.৫ সেমি
অঙ্কনঃ ১
নং এর ন্যায় অঙ্কন করো।
(৪) ২.৮ সেমি
অঙ্কনঃ ১
নং এর ন্যায় অঙ্কন করো।
এই বৃত্তগুলো
আঁকতে গিয়ে জানলাম যে, একটি নির্দিষ্ট বৃত্ত আঁকতে একটি নির্দিষ্ট বিন্দু ও একটি নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্যের ব্যাসার্ধ দরকার।
বৃত্তের বিভিন্ন অংশ খুঁজি [পাতা-২৩০]
বৃত্তের কেন্দ্রঃ
O
ব্যাসার্ধঃ
OA, OB, OC, OD
বৃত্তের যে
কোনো দুটো বিন্দু যোগ করে EF, DC, GH, MN, KL রেখাংশ পেয়েছি। এইগুলো জ্যা।
রেখাংশগুলোর
মধ্যে DC বৃহত্তম এবং এটা কেন্দ্র দিয়ে গেছে। এই জ্যাটি ব্যাস। ব্যাসই বৃত্তের বৃহত্তম
জ্যা।
আবার, DC
= DO+OC = DO+DO = 2*DO
ব্যাস = ২*ব্যাসার্ধ
∴ ব্যাস,
ব্যাসার্ধের দ্বিগুণ এবং ব্যাসার্ধ, ব্যাসের অর্ধেক।
বৃত্ত থেকে
কী কী পেলাম দেখি [পাতা-২৩১]
পরিধি →
যে নির্দিষ্ট বক্ররেখা দিয়ে বৃত্তটি
তৈরি হয় তার দৈর্ঘ্যই পরিধি।
কেন্দ্র →
বৃত্তাকার ক্ষেত্রের ভেতরের একটি
নির্দিষ্ট বিন্দু থেকে বৃত্তের প্রত্যেক বিন্দুর দূরত্ব সমান। সেই নির্দিষ্ট বিন্দু
বৃত্তের কেন্দ্র।
জ্যা →
বৃত্তের যে কোনো দুটি বিন্দু
যোগ করলে যে সরলরেখাংশ পাই সেটি বৃত্তের জ্যা।
ব্যাস →
বৃত্তের বৃহত্তম জ্যা যা বৃত্তের
কেন্দ্রবিন্দুগামী তা ব্যাস।
ব্যাসার্ধ
→ বৃত্তের কেন্দ্র ও বৃত্তের
যে কোনো বিন্দুর সংযোগকারী যে সরলরেখাংশ হলো ব্যাসার্ধ।
বৃত্তচাপ
→ বৃত্তের যে কোনো অংশ
বৃত্তচাপ।
পরের পাঠঃ
অঙ্কের মজা
আরওঃ