কার্ল ফ্রিডরিক গাউস এর সূত্র । ১ থেকে যেকোন স্বাভাবিক সংখ্যা পর্যন্ত যোগফল নির্ণয়ের নীতি

কার্ল ফ্রিডরিক গাউস এর সূত্র । ১ থেকে যেকোন স্বাভাবিক সংখ্যা পর্যন্ত যোগফল নির্ণয়ের নীতি, ধারার সূত্র, গাউসের নীতি বা সূত্র, গাউসের গল্প,

কার্ল ফ্রিডরিক গাউস এর সূত্র

আমরা যখন ১ এর সাথে ২ যোগ করি তখন এটা আমরা নিমিষেই করে ফেলি। আবার, যখন ১+২+৩+……+১০ করব, তখন কিন্তু একটু সময় নেই। কিন্তু যদি এই সিরিয়াল আরও বড় হয় যেমনঃ ১+২+৩+…..+১০০; তখন এটা চিন্তার উদ্রেগ করে যে যোগফল কত হবে বা কিভাবে করব। এই সমস্যা সমাধানের জন্য কার্ল ফ্রিডরিক গাউস / Carl Friedrich Gauss এর সূত্র খুবই কাজের। তিনি সহজ একটা গাণিতিক নীতি বা সূত্র আবিষ্কার করেন যাতে সহজে ১ থেকে যেকোন স্বাভাবিক সংখ্যা পর্যন্ত যোগফল নির্ণয় করা যায়। সূত্রখুঁজি সূত্র বুঝি অধ্যায়ে কার্ল ফ্রিডরিক গাউস এর সূত্রের প্রয়োগ লক্ষণীয়। এবার আসি সূত্রটি আসলে কি এবং এর পিছনের কাহিনী।

Carl Friedrich Gauss

কার্ল ফ্রিডরিক গাউস এর সূত্র কি?

১ থেকে যেকোনো স্বাভাবিক সংখ্যা পর্যন্ত ধারার যোগফল হলো ধারাটির শেষ সংখ্যার পরের সংখ্যার সাথে শেষ সংখ্যার অর্ধেকের গুণফল।

যেমনঃ ১ + ২ + ৩ + …………. ৬০

তাহলে,

এই ধারাটির যোগফল

= ৬০ এর পরের সংখ্যার সাথে ৬০ এর অর্ধেকের গুণফল

= (৬০+১)*৬০/

= ৬১*৩০

= ১৮৩০

সূত্র আবিষ্কারের গল্পঃ

অনেক কাল আগের কথা, কার্ল ফ্রিডরিখ গাউস তখন খুব ছোট ছিলেন। স্কুলের শিক্ষক শিক্ষার্থীদের বুদ্ধিমত্তা বৃদ্ধি ও বুদ্ধি প্রয়োগের কৌশল যাচাইয়ের জন্য নানান ধরনের গাণিতিক সমস্যা, পাজল সমাধান করতে দিতেন। এমনই একদিন গাউসের শিক্ষক ক্লাসে ১ – ১০০ পর্যন্ত সংখ্যাগুলোর যোগফল নির্ণয় করতে বললেন। তিনি ভাবলেন এই সমস্যাটি সমাধান করতে নিশ্চয়ই অনেক সময় লাগবে।

গাউস লক্ষ্য করলেন সমস্যাটি সমাধান করতে গিয়ে ক্লাসের সবার তো খাতা-কলম ছিঁড়ে ফেলার মতো অবস্থা। ছোট্ট গাউস একটি ফন্দি আঁটলেন। তিনি একটি বিশেষ নিয়মে ১ – ১০০ পর্যন্ত সংখ্যাগুলোর যোগফল বের করে ফেললেন এবং খুব অল্প সময়ের মধ্যেই শিক্ষকের কাছে খাতা জমা দিলেন। শিক্ষক যতক্ষণে এটি করতে দিয়ে তার চেয়ারে হেলান দিয়ে একটু আরাম করে বসবেন সেই সময়েই গাউসের সমাধান করা শেষ দেখে অবাক হয়ে গেলেন। ক্লাসের সহপাঠীরা গাউসের দিকে হা করে তাকিয়ে ছিলো। এখন তো নিশ্চয়ই সবার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে তিনি কীভাবে এটি এত সহজে সমাধান করেছিলেন! কী ছিল তার সমাধান কৌশল, ছবিতেই দেখে নেয়া যাক।


এখানে প্রথম সংখ্যা ১ ও শেষ সংখ্যা ১০০। এ দুটোর যোগফল হয় ১০১। আবার একই ভাবে ২ ও ৯৯ সংখ্যা দুটির যোগফল ১০১ । একই নিয়মে ৩ ও ৯৮ এর যোগফল ১০১। এভাবে যোগ করে মোট ৫০টি ১০১ পাওয়া যাবে। তাই সহজেই ১ – ১০০ এর যোগফল হবে ৫০× ১০১ = ৫০৫০। আর এভাবেই ছোট্ট গাউস খুব অল্প সময়েই ১ থেকে ১০০ পর্যন্ত সংখ্যাগুলোর যোগফল বের করেছিলেন। মজার বিষয় হলো – গাউসের এই পদ্ধতি থেকেই ১ থেকে যেকোনো স্বাভাবিক সংখ্যা পর্যন্ত যোগফল নির্ণয়ের সহজ একটি গাণিতিক সূত্র বা নীতি পাওয়া যায়। আর এই নীতিই পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে।

সহজে মনে রাখার সারণিঃ

কার্ল ফ্রিডরিক গাউস এর সূত্র ব্যবহার করে সহজে মনে রাখার মত একটি সারণি দেওয়া হলো। নিচে বিস্তারিতঃ

১ – ১০ পর্যন্ত যোগফল
১+২+৩+…………….+১০
৫৫
১ – ১০০ পর্যন্ত যোগফল
১+২+৩+…………….+১০০
৫০৫০
১ – ১০০০ পর্যন্ত যোগফল
১+২+৩+…………….+১০০০
৫০০৫০০
১ – ১০০০০ পর্যন্ত যোগফল
১+২+৩+…………….+১০০০০
৫০০০৫০০০
১ – ১০০০০০ পর্যন্ত যোগফল
১+২+৩+…………….+১০০০০০
৫০০০০৫০০০০
১ – ১০০০০০০ পর্যন্ত যোগফল
১+২+৩+…………….+১০০০০০০
৫০০০০০৫০০০০০

Impportant Link:

Math Bangladesh Solution Table

Class 6 Solution Table - New


শেষ কথাঃ

৩ + ৪ + ……+ ১০০;  এই যোগফল কিভাবে করা যায়? কেউ জানলে জানাবেন। গাউসের সূত্র কি এখানে প্রয়োগ করা যাবে? ধন্যবাদ।

Make CommentWrite Comment